

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার একমাত্র সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আধুনিকায়ন ও ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যা হাসপাতালে উন্নীতকরণের তীব্র দাবি উঠেছে। ১৯৬৪ সালে ১৪ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালটি শুরু থেকেই স্থানীয় ও আশপাশের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একমাত্র চিকিৎসা নির্ভরতার কেন্দ্র।
প্রায় ছয় দশক আগে নির্মিত মূল ভবনটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভগ্নদশার কারণে রোগী ও চিকিৎসক উভয়ই প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ৫০ শয্যা হাসপাতালে বিপুল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা কার্যকরভাবে চালানো এখন চরম চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন নতুন পাঁচতলা ভবন নির্মাণ এবং শয্যা সংখ্যা ১০০-এ উন্নীতকরণ ছাড়া এ সংকট সমাধান সম্ভব নয়।
অনেকের মতে, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সরকারিভাবে এখনও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়নি। বর্তমানে ভবনের নিচতলায় স্টোররুম, টিকিট কাউন্টার, স্যানিটারি ইন্সপেক্টর অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরের কার্যক্রম চলছে। কিন্তু ভবনের ভগ্নদশার কারণে চিকিৎসক, সেবাকর্মী ও রোগী সবাইকে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
স্থানীয় জনসাধারণের দাবি, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি দ্রুত ভেঙে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন পাঁচতলা হাসপাতাল ভবন নির্মাণ এবং বর্তমান ৫০ শয্যা হাসপাতালকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা এখন সময়ের দাবি। কারণ, উখিয়া উপজেলায় প্রায় ৫ লাখ স্থানীয় বাসিন্দা ও ১৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বসবাস করছে—যাদের চিকিৎসা নির্ভরতা একমাত্র এই হাসপাতালেই।
অন্যদিকে, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল উখিয়া থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় গুরুতর রোগীদের সময়মতো চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয় না। এতে অনেক সময় রোগীরা বিনা চিকিৎসায় প্রাণ হারান বলে অভিযোগ রয়েছে। উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছা. নাসরীন জেবিন বলেন,“বর্তমান ভবনটি সরকারিভাবে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়নি, তবে এটি অত্যন্ত পুরনো ও সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। ভবনটি নতুনভাবে নির্মিত হলে এবং হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত হলে স্থানীয় জনগণ ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে।”
তিনি আরও বলেন, “১০০ শয্যা হাসপাতালে উন্নীত হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সার্জারি, গাইনী, শিশু, মেডিসিন, ডেন্টালসহ আধুনিক বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে। আইসিইউ, ল্যাব সুবিধা ও জরুরি চিকিৎসা সেবা সম্প্রসারণের মাধ্যমে মাতৃ ও শিশুমৃত্যু হারও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।”
স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ১০০ শয্যা হাসপাতালে উন্নীত করা গেলে দক্ষিণ কক্সবাজারের লক্ষ লক্ষ মানুষ আধুনিক ও মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা পাবে—যা এ অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে
 
  
  
  
  
  
  
  
  
 
পাঠকের মতামত